ড্রাইভিং লাইসেন্স করব কি ভাবে?
ড্রাইভিং লাইসেন্সের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে হয় মোট ০৯ (নয়)টি ধাপে। ধাপ গুলো হ’লঃ
(১) ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়া;
(২) শিক্ষানবিস বা লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স ফরম সংগ্রহ ও পূরণ;
(৩) শিক্ষানবিস বা লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স ফরম জমা দেওয়া;
(৪) শিক্ষানবিস বা লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্সের সাথে কি কি কাগজ জমা দিতে হবে;
(৫) সময়মত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ও পরীক্ষায় উত্তীর্ণ;
(৬) স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য আবার ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়া;
(৭) স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য চূড়ান্ত আবেদন ফরম সংগ্রহ, পূরণ ও জমা দেওয়া:
(৮) স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স ফরম জমা দেওয়ার সময় কি কি কাগজ বা ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে;
(৯) আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্সটি বিআরটিএ অফিস থেকে সংগ্রহ করা:
(১) ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়া:
নতুন ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে হলে আবেদনকারীকে প্রথমে শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য ব্যাংকে টাকা জমা দিতে হবে। মোটরসাইকেল বা প্রাইভেট কার তথা হালকা মানের মোটরযান যে কোট একটি চালানোর জন্য শিক্ষানবিশ বা লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফি ভ্যাটসহ ৩৪৫/- (তিনশত পঁয়তাল্লিশ) টাকা ব্যাংকে জমা দিতে হবে। মোটরসাইকেল ও প্রাইভেট কার তথা হালকা মানের মোটরযান অর্থাৎ দুই ধরণের গাড়ি চালনার জন্য শিক্ষানবিশ বা লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফি ভ্যাটসহ ৫১৮/- (পাঁচশত আঠার) টাকা ব্যাংকে জমা দিতে হবে। ব্যাংকের শাখা বা বুথের তালিকার জন্য এখানে ক্লিক করুন https://goo.gl/Av5Vgc । তালিকায় উল্লেখিত বাংলাদেশের যে কোন শাখায় টাকা জমা দেওয়া যাবে। ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার পর অবশ্যই ব্যাংক থেকে দু’টি (একটি গ্রাহক কপি ও একটি বিআরটিএ কপি) মানি রিসিপ্ট বুঝে নেবেন। এছাড়াও https://www.ipaybrta.cnsbd.com/ -এ লিংকের মাধ্যমে ঘড়ে বসে অনলাইনেও টাকা জমা দিতে পারবেন। টাকা জমা দেওয়ার পর পেমেন্ট কনফার্মেশনটি প্রিন্ট করতে ভুলবেন না।
(২) শিক্ষানবিস বা লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স ফরম সংগ্রহ ও পূরণ:
শিক্ষানবিশ বা লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফি জমা দেওয়ার পর শিক্ষানবিশ বা লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফরম সংগ্রহ করতে হবে, যা https://goo.gl/2ces2L -এ লিংক থেকে ডাউনলোড করে নেওয়া যাবে অথবা যে কোন বিআরটিএ অফিস থেকে সংগ্রহ করা যাবে। এরপর তা সঠিক ভাবে পূরণ করে বিআরটিএ অফিস জমা দিতে হবে। শিক্ষানবিশ বা লার্নার ড্রাইভিং ফরম পূরণের গাইড লাইনের জন্য https://goo.gl/RL5pwD লিংকে ক্লিক করুন।
(৩) শিক্ষানবিস বা লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স ফরম কোথায় জমা দিব?
সঠিকভাবে ফরম পূরণ করা পরে ফরমটি বিআরটিএ’র অফিসে জমা দিতে হবে। আপনি যে এলাকায় বসবার করেন অর্থাৎ যে ঠিকানা ব্যবহার করে ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে চান সে এলাকা বিআরটিএ’র যে সার্কেল অফিসের আওতায় সে খানে ফরমটি জমা দিয়ে ঐ দিনই আপনার শিক্ষানবিশ বা লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্সটি সংগ্রহ করতে পারবেন। এই শিক্ষানবিস বা লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্সেই লিখিত, প্র্যাকটিক্যাল বা ব্যবহারিক ও মৌখিক পরীক্ষার তারিখ, সময় ও স্থান উল্লেখ থাকবে। আপনারা যারা ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে থাকে তার ঐ জেলার ডিসি অফিসের ভিতরে যে বিআরটিএ অফিস আছে সেখানে ফরম জমা দিবেন। আর ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার যারা আছে তারা দয়া করে https://goo.gl/Kpq7SN এ লিংক হতে আপনার বিআরটিএ অফিসটি দেখে নিন।
(৪) শিক্ষানবিস বা লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স ফরম জমা দেওয়ার সময় কি কি কাগজ বা ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে?
শিক্ষানবিস বা লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স ফরম জমা দেওয়ার সময় আপনাকে যে কাগজ বা ডকুমেন্ট সংযুক্ত করতে হবে তা হ’ল :
(ক) টাকা জমা দেওয়ার রশিদ (বিআরটিএ কপি);
(খ) বয়স প্রমাণের জন্য ০১ (এক) কপি জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি বা ০১ (এক) কপি পাসপোর্টের সত্যায়িত ফটোকপি বা ০১ (এক) কপি জন্ম নিবন্ধন/বার্থ সার্টিফিকেটের সত্যায়িত ফটোকপি;
(গ) শিক্ষানবিস বা লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স ফরম পূরণ করার সময় যে ঠিকানা দিয়েছিলেন আর জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি / পাসপোর্টের কপি/ জন্ম নিবন্ধন বা বার্থ সার্টিফিকেটের কপির ঠিকানা একই না হলে ফরমে লিখিত ঠিকানার বিদ্যুৎ বিল বা টেলিফোন বিল বা গ্যাস বিলের সত্যায়িত ফটো কপি;
(ঘ) ০৩ কপি স্ট্যাম্প সাইজ ও ০১ কপি পাসপোর্ট সাইজ রঙ্গিন ছবি;
(৫) সময়মত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ও পরীক্ষায় উত্তীর্ণ:
শিক্ষানবিস বা লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্সেই লিখিত, প্র্যাকটিক্যাল বা ব্যবহারিক ও মৌখিক পরীক্ষার তারিখ, সময় ও স্থান উল্লেখ থাকবে। নির্ধারিত সময়ের ১৫-২০ মিনিট পূর্বেই পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ। এ পরীক্ষা ৩টি ধাপে সম্পন্ন হবে। (ক) লিখিত পরীক্ষা; (খ) প্র্যাকটিক্যাল ও (গ) মৌখিক।
(ক) লিখিত পরীক্ষা: প্রথমে আপনাকে ২০ নাম্বারের লিখিত পরীক্ষা দিতে হবে। এ পরীক্ষায় ১৫-২০ মিনিটের বেশী সময়ের প্রয়োজন হয় না। এতে ৮-১০ মার্কের সংক্ষিপ্ত উত্তর ও বাকী অংশ MCQ প্রশ্ন থাকে। বিআরটিএ’র ওয়েবসাইটে দেওয়া প্রশ্ন ব্যাংক ভালোভাবে দেখে গেলেই লিখিত পরীক্ষায় পাশের নিশ্চয়তা ১০০%। ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষার নমুনা প্রশ্নের জন্য https://goo.gl/U6jLtC - এ লিংকে ক্লিক করুন। ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন-উত্তরের জন্য https://goo.gl/XmcdvR - লিংকে ক্লিক করুন আর MCQ প্রশ্ন-উত্তরের জন্য https://goo.gl/1JznwQ - লিংকে ক্লিক করুন।
(৬) স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য আবার ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়া;
পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ার ২-৩ সপ্তাহ পরে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের নামের তালিকা সম্বলিত একটি রেজুলেশন স্বাক্ষর হয়। উক্ত রেজুলেশন স্বাক্ষর হওয়ার পর স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স (মূল ড্রাইভিং লাইসেন্স) পাওয়ার জন্য পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য ১৬৮০/- টাকা (০৫ বছর মেয়াদের) ও অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য ২৫৪২/-টাকা (১০ বছর মেয়াদের) ব্যাংকে জমা দিতে হবে। ব্যাংকের শাখা বা বুথের তালিকার জন্য এখানে ক্লিক করুন https://goo.gl/Av5Vgc । তালিকায় উল্লেখিত বাংলাদেশের যে কোন শাখায় টাকা জমা দেওয়া যাবে। ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার পর অবশ্যই ব্যাংক থেকে দু’টি (একটি গ্রাহক কপি ও একটি বিআরটিএ কপি) মানি রিসিপ্ট বুঝে নেবেন। এছাড়াও https://www.ipaybrta.cnsbd.com/ -এ লিংকের মাধ্যমে ঘড়ে বসে অনলাইনেও টাকা জমা দিতে পারবেন। টাকা জমা দেওয়ার পর পেমেন্ট কনফার্মেশনটি প্রিন্ট করতে ভুলবেন না।
(৭) স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য চূড়ান্ত আবেদন ফরম সংগ্রহ, পূরণ ও জমা দেওয়া: স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফি জমা দেওয়ার পর স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফরম সংগ্রহ করতে হবে। অপেশাদার স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স ফরমে জন্য এখানে ক্লিক করুন। আর পেশাদার স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স ফরমে জন্য এখানে ক্লিক করুন। অথবা যে কোন বিআরটিএ অফিস থেকেও সংগ্রহ করা যাবে। এরপর তা সঠিক ভাবে পূরণ করে বিআরটিএ অফিস জমা দিতে হবে। স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফরম পূরণের গাইড লাইনের জন্য এখানে ক্লিক করুন। পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রয়োজন। কাজেই পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য যারা আবেদন করবেন তাদেরকে বিআরটিএ অফিস থেকে পুলিশ প্রত্যয়ন প্রদান করার অনুরোধ জানিয়ে পুলিশ বরাবরে একটি পত্র দিবে, তা নিয়ে আপনি আপনার জেলার এসবি পুলিশ-কে দিবেন এবং পুলিশি প্রত্যয়ন সংগ্রহ করে ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদনপত্র বিআরটিএ অফিসে জমা দিবেন। আর অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদনকারীকে বায়োমেট্রিক্স (যথা- আঙ্গুলের ছাপ, ছবি ও স্বাক্ষর) প্রদানের জন্য একটি তারিখ দিবে। উক্ত তারিখে বিআরটিএ’র অফিস এসে বায়োমেট্রিক্স (যথা- আঙ্গুলের ছাপ, ছবি ও স্বাক্ষর) প্রদান করতে হবে। বায়োমেট্রিক্স (যথা- আঙ্গুলের ছাপ, ছবি ও স্বাক্ষর) প্রদান করার পর বিআরটিএ অফিস থেকে আপনাকে একটি একনলেজমেন্ট স্লিপ বা অস্থায়ী গাড়ি চালনার অনুমতি পত্র পাবেন। এটি অবশ্যই ফটোকপি করে নিরাপদ জায়গায় রেখে দিন। কারণ এই একনলেজমেন্ট স্লিপের খেলা কিছু দিনের মধ্যে মুছে যায়।
(৮) স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স ফরম জমা দেওয়ার সময় কি কি কাগজ বা ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে?
(ক) নির্ধারিত ফী (পেশাদার- ১৬৮০/-টাকা ও অপেশাদার- ২৫৪২/-টাকা) রশিদের বিআরটিএ’র কপি;
(খ) ন্যাশনাল আইডি কার্ড / জন্ম সনদ/পাসপোর্ট এর সত্যায়িত ফটোকপি।
(গ) পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স-এর জন্য পুলিশি তদন্ত প্রতিবেদন।
(ঘ) সদ্য তোলা ১ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি।
(৯) আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্সটি বিআরটিএ অফিস থেকে সংগ্রহ করা:
বায়োমেট্রিক্স (যথা- আঙ্গুলের ছাপ, ছবি ও স্বাক্ষর) প্রদান করার পর স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রস্তুত হতে ৯০ দিনের সময়ের কথা উল্লেখ থাকলে সময় আরও বেশী লাগে। আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রস্তুত হয়ে গেলে পরে আপনার মোবাইলে মেসেজ দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে। এই মেসেজে আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স নাম্বার থাকে কাজেই এ মেসেজটি যদি ডিলিট না হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখবেন। এরপর বিআরটিএ অফিসে এসে একনলেজমেন্ট স্লিপ জমা দিয়ে মেসেজটি দেখিয়ে আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্সটি সংগ্রহ করতে হবে।
No comments:
Post a Comment